এবিএনএ: অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকোর ৫৫তম জন্মদিন উপলক্ষে সোমবার বনানী কবরস্থানে তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশকে মুক্ত করার জন্য অত্যন্ত সজাগ থেকে, রাস্তায় থেকে তাদের (পতিত স্বৈরাচারের) যে চক্রান্ত শুরু হয়েছে সেই চক্রান্তকে প্রতিরোধ করার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। জনগণের কাছে আমার এই প্রত্যাশা।
গতকাল ভারতের একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা বলেছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপ দিতে রাজি হননি বলেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বকওয়াজ (ভিত্তিহীন কথা)। নিজে যখন ব্যর্থ হন সেই তখন অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো তাদের একটা বৈশিষ্ট্য। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা ছিল ছাত্র-জনগণ-নাগরিকের একটা স্বতঃস্ফূর্ত গণজাগরণ। সেই গণজাগরণকে সুসংহত করাই আমাদের একমাত্র কাজ। শেখ হাসিনা বলুন, অন্যরা বলুন সবাই এখন এটাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। জনগণের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। সকলে ঐক্যবদ্ধ থেকে এই যে মুক্তি হয়েছে, এই যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তাকে সুসংহত করার জন্য কাজ করুন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা প্রকাশ করছি নতুন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তারা সামর্থ্য হবে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে। আমি অনুরোধ করব, অতি দ্রুত নির্বাচনের জন্য একটা ক্ষেত্র তৈরি করা এবং সব বিপদকে কাটিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা মুক্ত বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
‘ভারতে গণমাধ্যমে সংখ্যালঘুর হামলার খবর প্রোপাগান্ড’
ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে বলে খবর বেরিয়েছে। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, এসব প্রোপাগান্ডা। বাংলাদেশের এই গণজাগরণ এই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার জন্য, ব্যর্থ করার জন্য এই যে নতুন গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার তাকে ব্যর্থ করার জন্য তারা এই মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্ব জনমত তারা কেউ এটাকে বিশ্বাস করবেন না।
এর আগে সকালে বনানী কবরাস্থানে সহস্রাধিক নেতাকর্মী সমবেত হন। ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয় কোকোর কবরে। ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট কোকোর জন্ম। ক্রীড়া ক্ষেত্রে আরাফাত রহমান কোকোর ভূমিকার প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি, কোকোকে অত্যাচার-নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছিল। দেশের বাইরে চলে যেতে হয়েছিল ১/১১ সরকারের নির্যাতনের কারণে। বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন তিনি।
পুষ্পস্তবক অর্পণের সময়ে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শামীমুর রহমান শামীম, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাইফুল ইসলাম নিরব, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।